নিজস্ব প্রতিবেদক ->>
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় দলটির কর্মীদের পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের সম্পৃক্ত থাকার কথাও বলেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন।
গত শনিবারের পর থেকে বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে গত মঙ্গলবার দেওয়া বিবৃতিতে এমন বক্তব্য দেয় সংস্থাটি। ঢাকার নয়াপল্টনে শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পূলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। থেমে থেমে এ সংঘর্ষ কাকরাইল থেকে আশপাশের এলাকায় ছড়িয় পড়লে দলটির সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। পরে হরতাল ডেকে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতারা। পরদিনের হরতালেও সহিংসতার ঘটনা ঘটলে এবং মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হলে তিন দিনে অবরোধ ডাকে বিএনপি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের বিবৃতিতে সেদিনের ঘটনার বিবরণ তুলে ধরে বলা হয়, শনিবার সরকার বিরোধী বিক্ষোভকারীরা প্রধান বিচারপতি ও অন্য কয়েকজন বিচারপতির বাসায় হামলা করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। “অন্তত ৩০ জন সাংবাদিক নির্যাতিত হয়েছেন বিক্ষোভকারী এবং মুখোশধারী মোটরসাইকেল আরোহীদের হাতে, ধারণা করা হচ্ছে তারা ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক।” জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশন বলছে, “বাংলাদশে চলমান বিক্ষোভে বেশ কিছু সহিংস ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। “যখন দেশটি নির্বাচনের দিকে ধাবিত হচ্ছে, তখন এমন সহিংসতা যে অগ্রহণযোগ্য- তা স্পষ্টভাবে বলার জন্য এবং সংঘাতকে উস্কে দেয়-এমন ধরনের বক্তব্য বা কর্মকা- থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সব রাজনৈতিক পক্ষকে আহ্বান জানাই।
তিন দিনে কমপক্ষে ১১ জনের প্রাণহানির কথা তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, যার মধ্যে আছেন দুজন পুলিশ সদস্য, ছয়জন বিরোধী দলের কর্মী এবং দুইজন পথচারী। বিবৃতিতে বলা হয়, পত্রিকার খবর অনুযায়ী, বিক্ষোভের পাল্টায় পুলিশ রড, লাঠি, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। তারা দেশজুড়ে বিরোধী কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে, শত শত জনকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার ও আটক করেছে; যার মধ্যে রয়েছে কর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও।
“নিতান্ত প্রয়োজনের নিরিখে বলপ্রয়োগের জন্য আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই এবং তাই যদি হয়, সেক্ষেত্রে যেন আইন, পূর্বসতর্কতা এবং সঙ্গতির নীতি বজায় রাখা হয়।” বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ নেতাদের গ্রেপ্তার এবং দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তারের ভয়ে পালানোর কথাও তুলে ধরা হয় বিবৃতিতে।
জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশন বলছে, এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রাজনৈতিক শঙ্কা কমাতে সর্বোচ্চ সংযম পালন এবং নির্বাচনের সময়ে ও আগে-পরে সব বাংলাদেশির মানবাধিকার সম্পূর্ণভাবে রক্ষার উদ্যোগ নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।