স্পোর্টস ডেস্ক ->>
চোখে মুখে বিষন্নতা। পথ হারা নাবিক যেমন গন্তব্য খুঁজে পান না ঠিক তেমনই লাগছিল সাকিব আল হাসানকে। আলো ঝলমলে রুমেও আঁধার তার ভুবন। হারানোর ক্ষত মুখে লেগে আছে। শরীরে জড়তা। কথায় নেই তেজ। পাল্টা প্রশ্ন করে বিভ্রান্ত করার প্রয়াস চালাতে প্রায়ই দেখা যায় তাকে। আজ তা হারিয়ে একাকার।
আজ কেবলই আত্মসমর্পণের দিন। মাঠের ক্রিকেটের পর সংবাদ সম্মেলন কক্ষে। বিমূঢ় সাকিবের ভুবন ঘোরলাগা অমানিশায়। যেখান থেকে উত্তরণের পথ কী জানা নেই তারও। অকপটে তাই স্বীকার করতেও দ্বিধা করেন না বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘যে পরিস্থিতির ভেতরে এখন আমরা আছি সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন। খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে সমস্যার সমাধান করা। হজম করাও কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
২০০৭ বিশ্বকাপ থেকে বাংলাদেশের হয়ে নিয়মিত খেলছেন সাকিব। ২০২৩ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ মিসের আগ পর্যন্ত টানা ৩২ ম্যাচ খেলেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের পর গতকাল ইডেনেও খেললেন নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। ১৯৯৯ বিশ্বকাপ থেকে নিয়মিত খেলছে বাংলাদেশ। প্রথম আসরে দুই জয়ের পর ২০০৩ বিশ্বকাপে জয়হীন থাকে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপর থেকে প্রতি বিশ্বকাপে তিনটি করে জয়। কিন্তু এর কোনোটাই সাকিবের কাছে ‘আহামরি’ পারফরম্যান্স ছিল না। গত এশিয়া কাপ চলাকালে অবলীলায় এমন মন্তব্য করেছিলেন । এবার সেই তিনের গেরো ছুটানোর মিশনে আছেন সাকিবরা। কিন্তু ষষ্ঠ ম্যাচের পর অধিনায়ক স্বীকার করতে বাধ্য হলেন এটাই স্বরণকালের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ।
তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আজ পর্যন্ত ধরলে এটাই বাংলাদেশের স্বরণকালের সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ কিনা? উত্তরে বিনয়ী সাকিবের অকপট স্বীকার, ‘হ্যাঁ, সেটা আপনি নির্দ্বিধায় বলতে পারেন। এবং আমি দ্বিমত করব না।
প্রত্যাশামাফিক ফল না আসার পেছনে নিজেদেরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক, ‘বিশ্বকাপে যেভাবে খেলছি, খুবই হতাশাজনক। ম্যাচ জিতলে তো অবশ্যই দলের ভেতর আত্মবিশ্বাস আসে। সেটা যেখানেই হোক, যে দেশেই হোক। শেষ কিছু দিন ধরে ওয়ানডেতে ভালো করছি না। হোমে ইংল্যান্ড, আফগানিস্তানের কাছে হেরে গেছি। আমরা হয়তো ওরকম কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে আসেনি যেখানে অনেক চ্যালেঞ্জের সুযোগ হতো। এশিয়া কাপে খুব ভালো করিনি, ভারত ম্যাচ বাদ দিয়ে হতাশাজনক এশিয়া কাপ। এখানে আফগান ম্যাচ বাদ দিলে। এত খারাপ দল আমরা না।
নিজেদের প্রস্তুতি, পরিকল্পনা নিয়ে সাকিব বিশ্বকাপের আগে বেশ উচ্ছ্বসিত থাকলেও পথ ছুট হওয়ার পর স্বীকার করে নিয়েছেন, অপ্রস্তুত হয়েই ভারতে এসেছেন তারা, ‘হ্যাঁ আমরা অনেক আন্ডার প্রিপেয়ার্ড ছিলাম। এখন এসব অভিযোগ দিয়ে আসলে লাভ হবে না। তবে অবশ্যই প্রস্তুতি কম ছিল।