গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে অব্যাহতি দিয়েছেন আদালত। অপর ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু তাহেরের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। যাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করা হয়েছে, তারা হলেন: চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আলী, সাবেক মন্ত্রী কর্নেল আকবর হোসেনের (প্রয়াত) স্ত্রী জাহানারা আনছার, দুই ছেলে ইসমাইল হোসেন সায়মন ও এ কে এম মুসা কাজল, এহসান ইউসুফ, সাবেক নৌ সচিব জুলফিকার হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাবেক সদস্য এ কে রশিদ উদ্দিন আহমেদ এবং গ্লোবাল অ্যাগ্রোট্রেড প্রাইভেট লিমিটেডের (গ্যাটকো) পরিচালক শাহজাহান এম হাসিব, এ এম সানওয়ার হোসেন, সৈয়দ তানভীর আহমেদ, সৈয়দ গালিব আহমেদ এবং এ এম এম শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার এ মামলায় চার্জ শুনানির তারিখ ধার্য ছিল। খালেদা জিয়ার পক্ষে তার আইনজীবী হাজিরা দাখিল করেন। এর পর চার্জ গঠনের বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। আসামিপক্ষে আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, জাকির হোসেন ভূইয়া অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে, দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহাম্মদ আলী সালাম চার্জ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তিনজনকে অব্যাহতি দিয়ে ১২ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এ সময় উপস্থিত আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। খালেদা জিয়ার আরেক আইনজীবী আব্দুল হান্নান ভূঁইয়া সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গোলাম শাহরিয়ার চৌধুরী। তদন্ত শেষে ২০০৮ সালের ১৩ মে খালেদা জিয়াসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক জহিরুল হুদা।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গ্যাটকোকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি ও চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের কাজ পাইয়ে দিয়ে রাষ্ট্রের ১৪ কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি করেছেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে চার দলীয় জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার বিচার চলাকালে ৯ আসামি মারা গেছেন। তারা হলেন, সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো, এম কে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেম।