1. admin@dhakarhawa.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ অপরাহ্ন

থানায় জিডির ৫ দিনের মাথায় মিডিয়াকর্মীর বাসায় দুর্ধর্ষ চুরি

আসাদুজ্জামান আসাদ ->>
  • আপডেট সময় : শনিবার, ১ জুন, ২০২৪
  • ৭৬ বার পঠিত

রাজধানীর মিরপুরে থানায় নিরাপত্তা চেয়ে জিডি’র পাঁচ দিনের মাথায় বেসরকারি টেলিভিশন যমুনা টিভির স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ার মতিউর রহমানের বাসায় দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ মে) দুপুর আনুমানিক পৌনে ২ টার দিকে মিরপুর মডেল থানাধীন উত্তর পিরেরবাগের ৪২/১ নম্বর বাড়ির তৃতীয় তলায় তার নিজ ফ্ল্যাটে এ দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে।

৩ টি সোনার হার, ১ জোড়া হাতের বালা ও এক জোড়া কানের দুলসহ মোট ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ২ লাখ টাকা,৩ তিনটি মোবাইল ফোনসহ দামি জিনিসপত্র খোয়া গেছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী মিডিয়াকর্মী মতিউর রহমানের পরিবার।

ভুক্তভোগী মতিউর রহমানের স্ত্রী মাকসুদা আক্তার দৈনিক ভোরের চেতনা কে বলেন ঘটনার সময় আমি বাসায় একাই ছিলাম। দুপুর আনুমানিক দেড়টার দিকে বাথরুমে গোসল করতে প্রবেশ করি। গোসল শেষ করে বের হওয়ার সময় বুঝতে পারি বাথরুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ। অনেক চেষ্টার পরেও দরজা খুলতে না পেরে আমি বাথরুমের ভেন্টিলেটরের গ্লাস খুলে বাঁচাও বাঁচাও বলে ডাক চিৎকার করতে থাকি। আমি দীর্ঘক্ষণ ডাকচিৎকার করলেও অজ্ঞাত কারণে পাশের ফ্ল্যাটের কেও আমাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি৷ আমার ডাক চিৎকারের এক পর্যায়ে ৫ম তলা থেকে ছুটে এসে আমার বড় জাঁ-মুফতি আরা বেগম দরজা খুললে আমি বাথরুম থেকে বের হই। কিন্ত বেরিয়েই দেখি আমার আলমারী ও ওয়্যারড্রপ ভাঙ্গা,ফ্ল্যাটের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। তাৎক্ষণিক সবকিছু খুঁজে বুঝতে পারি বাসার দরজা ভেঙে বাসার ভেতরে প্রবেশ করে অভিনব কায়দায় কে বা কারা আমার ৩ টি সোনার হার,এক জোড়া হাতের বালা,এক জোড়া কানের দুলসহ মোট ৫ ভরি স্বর্ণালংকার, আলমারীতে থাকা নগদ ২ লাখ টাকা,৩ টি মোবাইল ফোনসহ দামি জিনিসপত্র চুরি করে পালিয়েছে। আমি তাৎক্ষণিকভাবে আমার বড় জাঁ-এর মুঠোফোন থেকে ফোন করে আমার স্বামীকে ঘটনা জানাই।

এবিষয়ে ভুক্তভোগী মতিউর রহমান জানান,ঘটনার সময় আমি যমুনা টেলিভিশনের কার্যালয়ে ডিউটিরত ছিলাম। বাসায় চুরি হয়েছে শুনে আমি অফিসের অনুমতি নিয়ে দ্রুত বাসায় চলে আসি। সাহায্যের জন্যে জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ কল দিলে কিছুক্ষণ পর মিরপুর মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর রকিবুল ইসলাম বাসায় এসে প্রাথমিকভাবে তদন্ত করেন।

কে বা কারা এমন ঘটনা ঘটাতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে মতিউর রহমান বলেন,যেহেতু আমি কাউকে দেখিনি-সেহেতু সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে দায়ী করতে পারছি না।

 

তিনি আরো বলেন,যৌথভাবে নির্মিত আমাদের বিল্ডিংয়ের ফ্ল্যাট মালিক সমিতির প্রভাবশালী সভাপতি শিরিন আক্তার ঝুমু গংদের সাথে ভবনের ৭তম তলায় রাজউকের অনুমতি বহির্ভূত অবৈধভাবে দুটি ফ্ল্যাট নির্মাণ,বিল্ডিংয়ে সারারাত ধরে অসামাজিক কার্যকলাপ ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, ভবন সংশ্লিষ্ট নানা অসংগতির বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন আমাদের পরিবারের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। এর আগে তারা একাধিকবার আমার ও আমার পরিবারের উপর হামলা করেন। এঘটনায় আদালতে একাধিক মামলা চলমান। বহুবার আমাকে হুমকি-ধমকির ঘটনায় মিরপুর মডেল থানাতেও বেশ কয়েকটি সাধারণ ডায়েরি করা রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এরপরেও বিবাদীরা আমাকে ও আমাদের পরিবারকে নানা ভাবে হয়রানিসহ হুমকি-ধামকি দিতেই থাকে। বাধ্য হয়ে আমি গত ২৬ মার্চ এসকল বিষয়াবলি তুলে ধরে ভবনের ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সভাপতি শিরীন আক্তার ঝুমু ও তার স্বামী সিরাজুল ইসলাম, বাদশা মিয়া সরকার, আবু সুফিয়ান মজুমদার,রুমু আক্তার,খায়রুল ইসলাম ও সাইফুর রহমানকে বিবাদী করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। এরপর থেকেই তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে ও আমার পরিবারকে বড় ধরণের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে আসছিলো। এতে করে একদিকে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা প্রতিমুহূর্তে চরম আতংকে দিনপাত করছিলাম। অপরদিকে তাদের হুমকি-ধমকি ও হয়রানির মাত্রা চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছলে বাধ্য হয়ে আমি সর্বশেষ চলতি মাসের ২৪ তারিখে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে মিরপুর মডেল থানায় আরো একটি সাধারণ ডায়েরী করি। দূর্ভাগ্যবশত থানায় জিডি’র পঞ্চম দিনের মাথায়ই আমার অনুপস্থিতিতে আমার বাসায় দুর্ধর্ষ এ চুরির ঘটনা ঘটলো। আমার মনে হচ্ছে এটি সাধারণ কোনো চুরির ঘটনা নয়। চুরির ঘটনার পেছনে হয়তো আরো বড় কোনো উদ্দেশ্য নিয়েই অজ্ঞাত শত্রুরা আমার বাসায় প্রবেশ করেছিলো। অন্য কোনো সুযোগ না পেয়ে তারা চুরি করে পালিয়েছে।

 

মতিউর রহমান আরো বলেন,পুলিশ ঘটনার প্রথমিক তদন্ত করে গিয়েছে। এঘটনায় আমার পরিবারের পক্ষ থেকে মিরপুর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করলে হয়তো এই দুর্ধর্ষ চুরির নেপথ্যে অন্য কোনো কারণ থেকে থাকলে তা সামনে আসবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মিরপুর মডেল থানার সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) রকিবুল ইসলাম জানান,বৃহস্পতিবার (৩০ মে) ৯৯৯ এর কলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতিক্রমে আমি ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক তদন্ত করেছি। ওসি স্যারকেও এবিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছি। ওসি স্যারের নির্দেশনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এঘটনায় প্রাপ্ত প্রকৃত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Facebook Comments Box

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা