1. admin@dhakarhawa.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন

বরিশালে ঠান্ডাজনিত রোগে ১০ শিশুর মৃত্যু

বরিশাল প্রতিনিধি ->>
  • আপডেট সময় : শুক্রবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৪
  • ১২৫ বার পঠিত

বিভাগের সবচেয়ে বড় হাসপাতাল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১ জানুয়ারি থেকে শুক্রবার (১৮ জানুয়ারি) পর্যন্ত সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

 

একইভাবে বিভাগের ভোলা সদর হাসপাতালে শ্বাসতন্ত্রে প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনমাস বয়সের শিশু রুহি ও ঝালকাঠিতে ঠান্ডাজনিত রোগে মারা গেছেন দুই শিশু। বিভাগীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪৫ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে ১৮৩ জন শিশু রোগী ভর্তি রয়েছে। আর বর্হিবিভাগে গড়ে প্রতিদিন চার শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। এরমধ্যে সিংহভাগ শিশু। অর্থাৎ বছরের প্রথম মাসের ১৮ দিনে ঠান্ডাজনিত রোগে ১০ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।

 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ঠান্ডার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিওলাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট ও ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগী। সরেজমিনে দেখা গেছে, শয্যা না পেয়ে অধিকাংশ রোগী মেঝেতে বিছানা পেতে নিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি। সবচেয়ে বেশি জ¦র-সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শেবাচিম হাসপাতালের শিশু বিভাগের প্রধান ডাঃ উত্তম কুমার সাহা বলেন, হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে গত ১২ জানুয়ারি থেকে জ¦র-সর্দি, কাশি ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন গড়ে ৩০ জনের বেশি শিশু ভর্তি হচ্ছে।

 

হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ এইচএম সাইফুল ইসলাম বলেন, ঠান্ডাজনিত কারণে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে এখন প্রতিদিন বেশি রোগী আসছে। শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় অনেককে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা সীমাবদ্ধতার মধ্যে সর্বোচ্চ সেবা দিচ্ছেন।

 

বেড়েছে আগুনে পোড়া রোগী ॥ তীব্র শীতে আগুন পোহাতে গিয়ে বরিশাল বিভাগে বেড়েছে দগ্ধ হওয়ার রোগীর সংখ্যা। শীতের তীব্রতা যত বাড়ছে রোগীর সংখ্যাও তত বাড়ছে। কিন্তু দগ্ধ রোগীর উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছে না বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আট বছর আগে হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট চালু হলেও তার উন্নতি হয়নি।

 

ক্রমান্বয়ে অবহেলা, লোকবল সংকটের নামেই বার্ন ইউনিটে পরিণত হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত ১ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত দগ্ধ ১৪ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে বেশিরভাগ শীত থেকে ঊষ্ণতা পেতে আগুন পোহাতে গিয়ে অথবা গরম পানিতে ঝলসে যাওয়া রোগী। আর দগ্ধ রোগীদের মধ্যে বয়স্ক এবং শিশুর সংখ্যাই বেশি। যারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন তাদের অধিকাংশকে বরিশালে চিকিৎসা ব্যবস্থা না থাকায় ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে।

 

বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ইনচার্জ সিনিয়র স্টাফ নার্স লিংকন দত্ত জানান, শীতের এই সময়টাতে আগুনে পোড়া রোগীর চাপ কিছুটা বেশি থাকে। গুরুত্বর দগ্ধ রোগীদের এখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব না হওয়ায় তাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ঢাকায় পাঠাতে হচ্ছে। হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ মারুফুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপকের পদ শূন্য।

 

সহযোগী অধ্যাপকের দুটি পদের মধ্যে আমি একাই আছি। তাছাড়া সহকারী অধ্যাপক দুইজন থাকলেও মিডলেভেল চিকিৎসকের সকল পদই শূন্য। রেজিস্ট্রার-সহকারী রেজিস্ট্রারের পাঁচটি পদই শূন্য। নেই মেডিকেল অফিসার। ১৪ জন স্টাফ নার্স রোটেশন অনুযায়ী কাজ করলেও তাদেরমধ্যে একমাত্র যিনি ইনচার্জের দায়িত্ব আছেন তিনিই সংশ্লিষ্ট কাজের বিষয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। ফলে রোগীদের সেবা দেওয়াটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগটি পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা অত্যন্ত জরুরি। কিন্তু চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী সংকটের কারণে সেই পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া যে ভবনটিতে বার্নের রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, সেই জায়গাটাও উপযুক্ত নয়। ভবনের অবস্থা ভালো না, রোগীদের অস্ত্রপাচারের জায়গা নেই, ড্রেসিং রুম একটি থাকলেও তার অবস্থা বেহাল।

Facebook Comments Box

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা