গতকাল শুক্রবার (১৫ই নভেম্বর) রাতে চট্টগ্রাম সুফি সেন্টারে মাসিক জিকরুল্লাহ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত মাহফিলের মহামান্য পরিচালক বারগাহে চিশতিয়া আলীয়া খানকাহ শরীফের পীর সাহেব খাজা ওসমান ফারুকী (খাজা’জী) জিকিরের তালিম প্রদান করেন।
এই মাসের জিকরুল্লাহ মাহফিলের আলোচনায় তিনি বলেন – মানুষের জীবনধারা গতিশীল তাই প্রতিনিয়ত এতে নতুন নতুন সমস্যার উদ্ভব ঘটে। মানুষ বেড়েছে, মানুষের সমস্যা বেড়েছে, পৃথিবীর পরিবেশ, প্রেক্ষিত ও প্রকৃতি বদলে গেছে, বদলে গেছে মানুষের সমস্যার ধরন-ধারণ। এ সকল পরিবর্তনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ বিধান দেয়ার জন্য যুগে যুগে পাঠিয়েছেন পথ প্রদর্শক অসংখ্য নবী-রাসূল (আ.)।
এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপনের মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে নবী-রাসূলগণ তাঁদের দাওয়াত পেশ করেছেন। সমস্যার প্রকৃতি এবং তার সমাধানের পদ্ধতি যুগে যুগে পরিবর্তিত হয়েছে। কিন্তু এক আল্লাহে বিশ্বাস স্থাপনের এ মূলনীতি সবসময়ই ছিল এক এবং অভিন্ন।
পৃথিবীর এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে আপনি কি শুধু দুঃখ-কষ্টই পুষে যাচ্ছেন? মানবজীবনের সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী যত দুঃখ, বেদনা এবং কষ্টের প্রকৃত সূত্রপাত নিজের ভেতরেই, সেইসাথে এর প্রতিকার আপনার মধ্যেই লুকিয়ে আছে তা জানেন কি? যদি জানতে চান তবে আমি আপনাকে জানতে সাহায্য করবো। প্রয়োজন শুধু সঠিক নিরিখে এক অপ্রতিরোধ্য নিয়ম জানা এবং প্রয়োগ করা যা জীবনের জঞ্জালকণা সরিয়ে দিতে সাহায্য করবে।
বস্তুবাদী মনোবিজ্ঞানীরাও এখন জিকিরের (অটোসাজেশন) মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব স্বীকার করেন। কেউ যদি বারবার বলতে থাকে, ‘আমি ভালো হচ্ছি’ তাহলে সে ভালো হয়ে উঠে। মনোবিজ্ঞানী Emile Coue দেখিয়েছেন- “Every day, in every way, I’m getting better and better”- এই অটোসাজেশন পুনরাবৃত্তিতে better মানুষ গড়ে উঠে।
শব্দই শক্তি। যার নাম যত বেশি উচ্চারিত হয়, সে ততবেশি শক্তিশালী হয়। জিকিরের শক্তি প্রায় সকলেই অনুভব করতে পারে। হদয়ে জিকির না থাকা একটি মহা রোগ। কঠিন রোগীর জীবন যেমন ধীরে ধীরে অর্থহীন হয়ে পড়ে, তেমনই মহান আল্লাহর জিকিরহীন ব্যক্তির জীবনও অর্থহীন হয়ে পড়ে।
এসময় সুফি সেন্টারের সদস্যরা এবং দেশ-বিদেশে থাকা ভক্ত আশেকানেরা অনলাইনেও অংশগ্রহণ করেন।