সপ্তাহের ব্যবধানে কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতি মণে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা। এতে কৃষক ব্যাপক খুশি হলেও বেশি দামে কিনে কম লাভে বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের।
তারা বলছেন, অন্য বছরের তুলনায় এ বছর পেঁয়াজের দাম বেশি। এ কারণে কৃষকের হাতে এখন পেঁয়াজ কম। আগে থেকেই বিক্রি করে ফেলেছেন তারা। এই অবস্থায় হাটে আমদানি কমে যাওয়ায় লাফিয়ে বাড়ছে দাম। জানা যায়, প্রতি রোববার কুমারখালী-পান্টি সড়কের চৌরঙ্গা মহাবিদ্যালয়ের মাঠে বসে সাপ্তাহিক পেঁয়াজের হাট।
সেখানে আশপাশের কয়েক উপজেলা থেকে কৃষক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ নিয়ে আসেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন ক্রেতা-বিক্রেতা। গত রোববার হাটে ৭০০ থেকে ৮০০ মণ পেঁয়াজের আমদানি হয়। মান ও আকার ভেদে ৫ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ৬ হাজার টাকা মণপ্রতি কেনাবেচা হয়েছে। অথচ গত সপ্তাহে প্রতিমণ বেচাকেনা ছিল ৩ হাজার ৮০০ টাকা থেকে ৪ হাজার ৬০০ টাকা। হাট পরিচালনা কমিটি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। হাট ঘুরে দেখা যায়, সড়কের দুই পাশ ও মহাবিদ্যালয়ের মাঠে কৃষক ও ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ বেচাকেনা করছেন। যদুবয়রা ইউনিয়নের বহলবাড়িয়া থেকে হাটে আসা কৃষক তৈয়েবুর রহমান বলেন, ‘দুই বছর আগে দাম ছিল না। গতবার ভেজাল বীজের কারণে চারা মরে গিছিল ভূঁইতি (জমিতে)। লোকসান ছিল মেলা। তবে ইবার পেঁয়াজের ফলনও ভালো, দামও ভালো। ইবার জানডা ইটু বাঁচবিনি।’ কথা বলার সময় খুশিতে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তৈয়েবুর বলেন, প্রায় তিন বিঘা জমিতে ১৬০ মণ পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল।
হাটে তিনি ৫ হাজার ৬০০ টাকা করে ৪ মণ ২৩ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করেছেন। বগুড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন ৪৭ মণ পেঁয়াজ কেনেন। তিনি বলেন, গত হাটের চেয়ে এই হাটে দাম ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা বেশি। হাটের ইজারাদার আবু আব্দুল্লাহ বলেন, ‘১৬ লাখ টাকায় হাটের ইজারা নিয়েছি। ৫০০ থেকে ৭০০ মণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ কুমার দাস জানান, এ বছর কুমারখালী উপজেলায় ৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে।
গেল দুই বছরের তুলনায় এবার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকরা খুশি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, দাম নিয়ন্ত্রণে টাস্কফোর্স, ভোক্তা অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন নিয়মিত বাজার মনিটার করছে।