বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের লেমুয়া খাজুরা পি.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলীর অনিয়ম, দুর্নীতির প্রতিবাদে ও তাকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী অভিভাবক ও এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ১১ টার সময় পি.কে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন করেন তারা। এ সময় তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক ইউসুফ আলী যোগদানের পর থেকেই স্কুলে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে স্কুলের পাঠদান। প্রধান শিক্ষকের কারণে শিক্ষার্থীরা অন্য স্কুলে চলে যাচ্ছে।
যতক্ষণে তাকে স্কুল থেকে অপসারণ করা না হবে ততক্ষণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসবে না।
লেমুয়া খাজুরা পার্বতী কলাতলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলীর অনিয়ম-দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালা কমিটির সভাপতি
মোঃ ইমতিয়াজ হোসেন সোহেল পঞ্চায়েত জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী তার বিরুদ্ধে শিক্ষককে মারধর, বিদ্যালয়ের গাছ কাটা, টাকা লুটের যে অভিযোগ এনেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। তিনি এ অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সভাপতিসহ ম্যানেজিং কমিটির কারো কোন সম্পৃক্ততা নেই। প্রধান শিক্ষক ছাত্রছাত্রীদের দিয়ে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করিয়েছেন। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে গত আগস্ট মাসে যে গাছ কাটার মামলা হয়েছে তা নভেম্বর মাসে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত ম্যানেজিং কমিটির সকলকে অব্যাহতি দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী এই বিদ্যালয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে যোগদান করার পর থেকেই বিভিন্ন মামলা-মোকদ্দমা জড়িয়ে যান। এবং বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ করেন। সভাপতি হিসেবে আমি দায়িত্বভার গ্রহণ করার পরে তার অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তিনি আমার উপর অসন্তুষ্ট ও ক্ষিপ্ত হয়ে আমার মান সম্মান ও সামাজিক অবস্থানকে নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লাগেন। গত আগস্ট মাসের ম্যানেজিং কমিটির সভায় বিদ্যালয়ের টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়ায় ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক বিধিমত তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় এবং বিদ্যালয়ের টাকা ফিরিয়ে পাওয়ার জন্য ২০ আগস্ট ২০২৩ তারিখে বরগুনার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার নং সিআর ১০৫৩/২৩ (বর)। বর্তমানে এই মামলাটি পিবিআইতে তদন্তাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রধান শিক্ষক মোঃ ইউসুফ আলী এনটিআরসিএ কর্তৃক দ্বিতীয় মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মোঃ ইসমাইল হোসেনকে বিদ্যালয় যোগদান করতে না দিলে তৎকালীন এডিসি মহোদয়ের নির্দেশক্রমে নিয়োগ দিতে বাধ্য হন এবং ইসমাইল হোসেনের নিকট থেকে আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকেই দুর্নীতির সাথে জড়িত। তিনি লেমুয়া খাজুরা পিকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। বিদ্যালয়ের অভিভাবকদের সাথে সবসময় দুর্ব্যবহার করেন বিধায় বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র-ছাত্রী অন্যত্র গিয়ে লেখাপড়া করছেন। মানববন্ধন শেষে ওই প্রধান শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।