দশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমাদানকারী চট্টগ্রামের ৮ জন প্রার্থীর হলফনামায় আয়-ব্যয়ের হিসাবসহ সম্পদ বিবরণী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কারও সম্পদ ও আয় বেড়েছে। কারও স্ত্রীর সম্পদ বেশি, আবার কারও দেনা রয়েছে। জানা যায়, চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন থেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এর শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা। পেশায় আইনজীবী। বাৎসরিক আয় কৃষিখাতে ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৫০ টাকা, পেশা সম্মানি ১৪ লাখ ৫২ হাজার ১০৮ টাকা, চাকরি ১০ লাখ ৩৮ হাজার টাকা, অন্যান্য ১৬ লাখ ৬৩ হাজার ১৭০ টাকা। প্রার্থীর ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয় নেই। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ টাকা ৩২ লাখ ৫০ হাজার ৯৪ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ১০ লাখ টাকা, পোস্টাল সেভিংস ছয় কোটি দুই লাখ ১৭ হাজার ৪১২ টাকা, স্বর্ণ চার লাখ টাকা, আসবাবপত্র পাঁচ লাখ টাকা, ইনভেস্টমেন্ট ৪২ লাখ ২৪ হাজার ৪৫০ টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ২৫ লাখ ৮৬ হাজার ৫০৯ টাকা, বৈদেশিক মুদ্রা আট হাজার ডলার, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ১০ লাখ ৮৫ হাজার ৯১০ টাকা, স্বর্ণ ১০ লাখ টাকা, ইলেকট্রিক সামগ্রী ১০ লাখ টাকা, আসবাবপত্র ১০ লাখ টাকা, অন্যান্য ১৭ হাজার টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে কৃষি জমি চার লাখ টাকা, দালান এক কোটি টাকা, স্ত্রীর নামে ৩৫ লাখ টাকা মূল্যমানের দালান আছে। তিন কোটি ৬৫ লাখ ৫৩ হাজার ৯৭২ টাকা দায় আছে।
নোমান ও তাঁর স্ত্রীর নগদ টাকা বেড়েছে: সাত মাসের ব্যবধানে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ প্রার্থী নোমান আল মাহমুদ ও তাঁর স্ত্রীর নগদ টাকা বেড়েছে ১০ লাখ ৭০ হাজার ৩৯ টাকা। কিন্তু ব্যবসায় আয় বাড়েনি। নোমানের চেয়ে তাঁর স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণও বেশি। সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা বেড়েছে ৯৫ হাজার ৮০৬ টাকা। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নোমানের নগদ টাকার পরিমাণ ১৯ লাখ ৭৫ হাজার ৭৩১ টাকা। ৭ মাস আগে নিজের নগদ টাকা ছিল ১৭ লাখ ৯৬ হাজার ৬৯২ টাকা। বর্তমানে স্ত্রীর নামে নগদ টাকা আছে ২৯ লাখ ৭ হাজার ৪১৪ টাকা। ৭ মাস আগে স্ত্রীর নামে ছিল ২০ লাখ ১৬ হাজার ৪১৪ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৭ মাস আগে নোমানের জমা ছিল এক লাখ ৬০ হাজার টাকা আর স্ত্রীর নামে ছিল তিন লাখ ৪০ হাজার টাকা। এখন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নোমানের জমা আছে ৭ হাজার ৬৪৯ টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো জমা নেই। নোমানের বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৩৬ হাজার ৬৮৭ টাকা। আগে ছিল ৬০ হাজার টাকার। নিজের নামে দেড় লাখ টাকার স্বর্ণাংলকার রয়েছে। স্ত্রীর নামে আছে ৪০ তোলা। ৫০ হাজার টাকার টিভি, ফ্রিজ ও অন্যান্য সামগ্রী রয়েছে নোমানের। ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। অন্যান্য ব্যবসায় নোমানের নয় লাখ ৬০ হাজার টাকার ও স্ত্রীর নামে ২০ লাখ টাকার মূলধন রয়েছে। গত মার্চ মাসে উপণ্ডনির্বাচনে তিনি হলনামায় বছরে আয় দেখিয়েছিলেন চার লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৭ মাসে ব্যবসা থেকে আয় বাড়েনি। শুধু সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতা বেড়েছে ৯৫ লাখ ৮০৬ টাকা। ৭ মাস আগে নির্ভরশীলদের আয় চার লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল। এখন সেই আয়ও নেই। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে কোনো কৃষি জায়গা-জমি বা সম্পদ নেই। স্ত্রীর নামে তিন লাখ ২০ হাজার টাকা দামে ৩১৫ বর্গফুটের এজমালী স্থাপনাসহ ভিটা ভূমি রয়েছে। নিজের নামে তিন লাখ ২০ হাজার ৪৯৭ টাকার ৩৮২ বর্গফুটের জায়গা রয়েছে।
এম এ লতিফের নগদ আছে আড়াই কোটি টাকা: চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এম এ লতিফ এমপি পেশা হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্যবসা। শিক্ষাগত যোগ্যতা ডিপ্লোমা ইন লেদার টেকনোলজি (জার্মানি)। তিনি বছরে ৭৫ লাখ, ৪২ হাজার ২৮২ টাকা আয় করেন এবং ২২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৪০ টাকা ব্যয় করেন। আয়ের ক্ষেত্রে কৃষি খাত থেকে বছরে ১৯ লাখ ১৫ হাজার ৮৪৭ টাকা, ব্যবসা থেকে বছরে আয় দেখিয়েছেন ২০ লাখ ৭২ হাজার ৩৪৪ টাকা। শেয়ার থেকে আয় করেছেন ২ হাজার ৩৬৫ টাকা। চাকরি এবং সম্মানি বাবদ আয় করেছেন ২৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৫ টাকা। অন্যান্য খাত থেকে আয় করেছেন ৯ লাখ ৫৬ হাজার ৪১১ টাকা। নগদ রয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ ৯০ হাজার ৮৬১ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৫২ লাখ ১৯ হাজার ২৩০ টাকা। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকার পরিমাণ ৪২ লাখ ৪২ হাজার ৬২৩ টাকা, স্ত্রীর নামে জমা রয়েছে ৭৮ লাখ ৪৪ হাজার ৪৫৭ টাকা। নিজের নামে বন্ড ঋণপত্র এবং শেয়ার রয়েছে ৮ লাখ ৪৬ হাজার ৬৫০ টাকা। স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪৪ লাখ ৭৩ হাজার ৩২৫ টাকা। এম এ লতিফের গাড়ি রয়েছে ৭ লাখ ৫ হাজার ২৫০ টাকার। নিজের নামে স্বর্ণ রয়েছে ৪৫ হাজার টাকার। স্ত্রীর নামে স্বর্ণ ও মূল্যবান ধাতু ও পাথরনির্মিত অলংকার রয়েছে ৫ হাজার টাকার। নিজের নামে ৭৮ হাজার টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৮০ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী রয়েছে। আসবাবপত্র রয়েছে নিজ নামে ২৫ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে ৩০ হাজার টাকার। তিনি ঋণ প্রদান এবং গাড়ি ক্রয়ের জন্য অগ্রিম হিসেবে প্রদান করেছেন ২ কোটি ৭৫ লাখ ১৪ হাজার ৩২২ টাকা।
মহিউদ্দিন বাচ্চুর স্ত্রীর নগদ বেড়েছে: চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু চার মাস আগে উপণ্ডনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পেশায় ব্যবসায়ী ও স্বশিক্ষিত এই নেতার চার মাস আগে জমা দেওয়া হলফনামায় স্ত্রীর নগদ টাকা না থাকলেও এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাত লাখ তিন হাজার ৫০০ টাকা। একইভাবে চার মাস আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছিল ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এবার স্ত্রীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা নেই। হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ প্রার্থী মহিউদ্দিন বাচ্চু পেশায় ব্যবসায়ী। ব্যবসা খাতে বাৎসরিক আয় ১৭ লাখ ৯৪ হাজার ৫০০ টাকা। চার মাস আগে একই নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় আয় ছিল ১৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫২৫ টাকা। সেসময় নির্ভরশীলদের ওপর চার লাখ ৫৫ হাজার টাকা আয় থাকলেও এবার আয় নেই। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে বাচ্চুর নগদ টাকা আছে ১১ লাখ তিন হাজার ৪৮৪ টাকা, স্ত্রীর নামে সাত লাখ তিন হাজার ৫০০ টাকা আছে। চার মাস আগে নিজ নামে নগদ টাকা দেখিয়েছিলেন ৬ লাখ ৬৬ হাজার ২৪৫ টাকা। সেসময় স্ত্রীর নামে নগদ টাকা ছিল না। চার মাস আগে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বাচ্চুর স্ত্রীর নামে ব্যাংকে জমা দেখানো হয়েছিল ৬ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। এবার স্ত্রীর ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে টাকা নেই। চার মাস আগে বন্ড, ঋণপত্র, স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয় এমন পৃথক পাঁচটি কোম্পানিতে মহিউদ্দিন বাচ্চু ও স্ত্রীর নামে শেয়ারে বিনিয়োগ রয়েছে এক কোটি আট লাখ টাকা। এবারও একই অংকের শেয়ার মূল্য আছে বাচ্চু ও তাঁর স্ত্রীর। বর্তমানে তার দুইটি গাড়ি বাবদ সম্পদ দেখানো হয়েছে ৯০ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে ৩৫ হাজার টাকার মূল্যের স্বর্ণাংলকার দেখানো হয়েছে। ৩০ হাজার টাকার টিভি, ফ্রিজ ও অন্যান্য সামগ্রী ছাড়াও মহিউদ্দিন বাচ্চুর নামে ৬০ হাজার টাকা ও স্ত্রীর নামে এক লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে মহিউদ্দিন বাচ্চুর নিজের নামে তিন কোটি ৫০ লাখ ৬১ হাজার ৫০০ টাকার অকৃষি জমি রয়েছে। স্ত্রীর নামে রয়েছে ২৫ লাখ ২০ হাজার টাকার ফ্ল্যাট।
মনজুর আলমের দুই হাজার কোটি টাকার ঋণ: চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলম পেশায় ব্যবসায়ী। তিনি ২০টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, বাৎসরিক আয় কৃষিখাতে তিন লাখ ৮০ হাজার টাকা, বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্টে ৭২ লাখ ২২ হাজার ১৫৬ টাকা, ব্যবসায় ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৮৫০টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত ৭৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০২ টাকা, পেশা হতে সম্মানি এক লাখ ৪৪ হাজার টাকা, খালি জায়গা ভাড়া ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৫৬৮ টাকা। নির্ভরশীলদের বাৎসরিক আয় বাড়ি অ্যাপার্টমেন্টে ১৬ লাখ ৮২ হাজার ৪৭৬ টাকা ও শেয়ার, সঞ্চয়পত্রে আমানত ৯ লাখ ২০ হাজার ৮২৭ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে মনজুর আলমের নিজ নামে নগদ টাকা ৯ লাখ ২৬ হাজার ৬৩৮ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ৬৭ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৫ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ৩৮ কোটি ৩৫ লক্ষ ২০ হাজার ২০৬ টাকা। চার লাখ ৩০ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি, ১২ লাখ ৩৩ হাজার টাকার স্বর্ণ আছে, চার লাখ আট হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে। অন্যান্যের মধ্যে স্টক ও রিসিবেবল আছে ৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে নগদ আছে ৩৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৭১ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৮৮ হাজার ০৬১ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার তিন কোটি ৩৭ লাখ ৭৬ হাজার ৫৬৫ টাকা, স্বর্ণ আছে ২১ লাখ ৬০ হাজার টাকা, তিন লক্ষ তিন হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে কৃষি জমি আছে ২৫ লাখ ৫৩ হাজার ৪২০ টাকা, স্ত্রীর নামে চার লাখ ৮৪ হাজার ২০০ টাকা, দালান আছে নিজ নামে ১১ কোটি ২১ লাখ ৯১ হাজার ৯৭৩ টাকা, স্ত্রীর নামে এক কোটি ৭৯ লক্ষ ২৮ হাজার ৭১ টাকা, নিজ নামে ৫৪ লাখ ৮৪ হাজার ২৮৫ টাকার সম্পদ আছে। একটি ব্যাংকে ৯ কোটি ১৬ লাখ টাকার দায় আছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ঋণ আছে।
আবদুচ ছালামের বাৎসরিক আয় ৯৪ লাখ ৫২ হাজার ১৩৯ টাকা: চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুচ ছালাম পেশায় ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি। তিনি ২০টি শিল্প ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার ও অংশীদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নেওয়া আবদুচ ছালামের বছরে আয় ৯৪ লাখ ৫২ হাজার ১৩৯ টাকা। স্ত্রীর আয় ১৫ লাখ ৮১ হাজার ২৩০ টাকা। পারিবারিক সম্পদের ৬ ভাগের এক ভাগের মালিক হিসেবে সম্পদ বিবরণীতে দেখিয়েছেন, তিনি ২ কোটি ৬৮ লাখ ৬৩ হাজার ২৬৬ টাকার কৃষি জমির মালিক। অকৃষি জমির পরিমাণ ১৩৩.১৫ শতক। মূল্য ১ কোটি ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার ৪০০ টাকা। দালান, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের মূল্য ৩ কোটি ১০ লাখ ৬৩ হাজার ১৪৯ টাকা। ছয় ভাগের এক ভাগের মালিক হিসেবে তিনি কৃষি খাত থেকে বছরে ২৯ হাজার ৮৫০ টাকা, বাড়ি, এ্যাপার্টমেন্ট, দোকানসহ অন্যান্য খাত থেকে ভাড়া বাবদ বছরে আয় করেন ১১ লাখ ৯ হাজার ৩৩ টাকা। তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের যৌথ অংশীদার হিসেবে আয় করেন ৮৩ লাখ ১২ হাজার ৪৪৯ টাকা, শেয়ার এবং ব্যাংক জামানত থেকে আয় ৮০৭ টাকা, এই খাত থেকে স্ত্রীর আয় ১ কোটি ৪১ লাখ ২৩০ টাকা। আবদুচ ছালামের স্ত্রী সানজি টেক্সটাইল থেকে রিমুনেশন পান ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে দেড় কোটি টাকারও বেশি।
সোলায়মান শেঠের বাৎসরিক আয় ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা: চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলায়ামান আলম শেঠ ব্যবসায়ী। প্রিন্টিং ও ট্রেডিং ব্যবসা থাকলেও চাকরি থেকেই বাৎসরিক আয় করেন ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। শিক্ষাগত যোগ্যতা আই কম। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, বাৎসরিক আয় বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্টে ১৫ লাখ ৬২ হাজার ২২৪ টাকা। ব্যবসায় শেঠ ট্রেডিং চার লাখ ৫৫ হাজার ২০০ টাকা, আইডিয়াল প্রিন্টিং হাউজ তিন লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা। চাকরি থেকে ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে নিজ নামে নগদ টাকা এক কোটি ২৩ লাখ ৪৭ হাজার ৬৬৭ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজ নামে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ আল আরফা ইসলামি ব্যাংক লিমিটেড পাঁচ লাখ ৬৪ হাজার ১৮৩ টাকা, শাহ জালাল ইসলামি ব্যাংক লিমিটেডে এক কোটি ৭০ হাজার ৭৫ লাখ ৭০০ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র স্টক একচেক্স শেয়ার ৬৬ লাখ টাকা, গাড়ি আছে পাঁচটি। স্বর্ণ আছে ২৫ লাখ টাকা, ইলেকট্রিক সামগ্রী দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা, আসবাবপত্রের বিবরণী চার লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদ নিজ নামে অকৃষি জমি পৈত্রিকভাবে প্রাপ্ত জমির মূল্য ১৪ কোটি ৫০ লাখ ১২ হাজার ৭৯৮ টাকা, খাগড়াছড়িতে জমির মূল্য ৫৪ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। দুটি ব্যাংকে দেনা আছে ১০২ কোটি ৮৯ লাখ ৪৯ হাজার ৬৬২ টাকা।
সুমনের বাৎসরিক আয় দেড় কোটি টাকা: চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর পতেঙ্গা) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমন এইচএসসি পাস। পেশা ব্যবসা হলেও কৃষিতেই আয় করেন বেশি। বাৎসরিক আয় দেড় কোটি টাকার হলেও ব্যবসায় আয় ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৫ টাকা। হলফনামায় তিনি উল্লেখ করেন, বাৎসরিক আয় কৃষিখাতে এক কোটি ৫০ লাখ টাকা, বাড়ি, এপার্টমেন্টে ৬৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা, ব্যবসায় ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৫টাকা, শেয়ার ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৩১০ টাকা, সম্মানি দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা। নির্ভরশীলদের মধ্যে স্ত্রীর বাৎসরিক আয় কৃষিখাতে ৩৫ লাখ টাকা, ব্যবসা ৩০ লাখ টাকা, ডিপিএস তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা, অন্যান্য ৯ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজ নামে নগদ টাকা ৮৭ লাখ ৩৫ হাজার ২৬৩ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থ ১৫ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৪৯ টাকা, বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার ১০০ টাকা মূল্যের এভেন্স পাঁচ হাজারটি। স্ত্রীর নামে নগদ আছে এক লাখ টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ৯৮ লাখ ৪১ হাজার ১০০ টাকা। বন্ড, ঋণপত্র, স্টক একচেঞ্জ তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা। স্ত্রী ও নিজের নামে গাড়ি আছে চারটি। স্ত্রীর কাছে স্বর্ণ আছে ৪০ হাজার টাকা। নিজের আছে ৬০ হাজার টাকা। নিজের নামে ৯০ হাজার টাকার আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী আছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে কৃষি জমি আছে ৫০ শতাংশ, অকৃষি জমি আছে ৫০ শতাংশ দালান আছে ৫০ শতাংশ, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট আছে ৫০ শতাংশ। দেনার মধ্যে ব্যাংক লোন আছে ৩৫ লাখ ২২ হাজার ২৩৯ টাকা, বনফুল হতে অগ্রিম গ্রহণ তিন লাখ টাকা, ওয়ালটন থেকে অগ্রিম গ্রহণ সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা।