1. admin@dhakarhawa.com : admin :
সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৪৯ পূর্বাহ্ন

কক্সবাজারে ট্রেনের প্রথম হুইসেল, উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসী

কক্সবাজার প্রতিনিধি ->>
  • আপডেট সময় : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৯৬ বার পঠিত

হুইসেল বেজে প্রথমবারের মতো পর্যটন নগরী কক্সবাজারের উদ্দেশে ছুটল ট্রেন। অবশ্য এটা কোনো যাত্রীবাহী ট্রেন নয়, নয় ট্রায়াল ট্রেনও। দোহাজারী-কক্সবাজার নতুন রেলপথের সবকিছু ঠিক আছে কিনা সেটি যাচাই করতেই এই পরিদর্শন ট্রেন চালানো হচ্ছে। তবে হুইসেল শুনে ট্রেন দেখতে অনেকে দৌড়ে এসেছেন, উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে শিশু-কিশোরদেরও।

আজ রোববার সকাল ৯টা ২ মিনিটে একটি লোকমোটিভসহ ৮টি কোচের পরীক্ষামূলক ট্রেন লম্বা হুইসেল দিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ছাড়ে। এতে রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শক রুহুল কাদের আজাদের নেতৃত্বে রেলওয়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-প্রকৌশলীরা এই ট্রেনে আছেন। হুইসেল শুনে অনেকে দৌড়ে এসেছেন, উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে শিশু-কিশোরদের।

আগামী ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে কক্সবাজারের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্নপূরণ হতে চলেছে। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব হচ্ছে ১৫০ কিলোমিটার। দোহাজারী থেকে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, রামু হয়ে পাহাড় ও নদীপথ দিয়ে পর্যটননগর কক্সবাজার পর্যন্ত এই রেললাইন চলে গেছে। এই পথে আছে ৯টি রেলওয়ে স্টেশন, চারটি বড় ও ৪৭টি ছোট সেতু, ১৪৯টি বক্স কালভার্ট এবং ৫২টি রাউন্ড কালভার্ট।

আজ রোববার সকাল ১০টায় ট্রেনটি দোহাজারী স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর সেখান থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশে রওনা দেয়। ট্রেনটি বিকেল সাড়ে ৫টায় কক্সবাজার পৌঁছার কথা রয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেলের পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কক্সবাজারে অবস্থান করবেন। ৬ নভেম্বর ওই টিম কক্সবাজার রেলস্টেশন ইয়ার্ড পরিদর্শন করবে। ৭ নভেম্বর সকাল ৭টায় তারা চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দেবেন।

পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রথম এই ট্রেনটি চালাচ্ছেন লোকোমাস্টার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান এবং সহকারী লোকোমাস্টার রুখন মিয়া। ট্রেনে একাধিক গার্ড, রেলওয়ে পুলিশ, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য (আরএনবি), রেল ট্র্যাক সংক্রান্ত রেলকর্মী, প্রকৌশল, বাণিজ্যিক ও পরিবহন বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন।

ট্রেনে জিআইবিআর রুহুল কাদের আজাদ, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. নাজমুল ইসলাম, দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের উপণ্ডপ্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম আজাদ সহ পূর্ব রেলের শীর্ষ কর্মকর্তারা রয়েছেন। জিআইবিআর স্পেশাল ট্রেনে করে সরকারি রেল পরিদর্শক (জিআইবিআর) দোহাজারি-কক্সবাজার রেলপথ প্রকল্পের কারিগরি তদারকি করছেন। ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, নিয়ম হলো নতুন রেলপথ নির্মাণ করা হলে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা। আজ ট্রেনটির ট্রায়াল রান না হলেও কক্সবাজারে যাওয়া প্রথম ট্রেন। রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের পরিদর্শকের অনুমোদন ছাড়া প্রকল্প উদ্বোধনের কোনো সুযোগ নেই।

এর আগে শনিবার ৯২ বছরের পুরোনো কালুরঘাট সেতুতে ২২০০, ২৯০০ ও ৩০০০ সিরিজের তিনটি ইঞ্জিনের ট্রায়াল সম্পন্ন করে রেলের প্রকৌশল বিভাগ। চলতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ট্রায়াল রান (পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল) শেষে বহুল প্রতীক্ষিত রেলপথটি উদ্বোধন করা হবে।

দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ প্রকল্প ২০১০ সালের ৬ জুলাই একনেকে অনুমোদন পায়। ২০১৮ সালে এই রেলপথ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ৩০ জুন। পরে এক দফা বাড়িয়ে প্রকল্পের মেয়াদ করা হয় ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এতে ব্যয় ধরা হয় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। প্রকল্পে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। তবে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। এ প্রকল্পের কাজ পুরোদমে চলায় নির্ধারিত সময়ের আগেই তা সমাপ্ত হতে যাচ্ছে।

২০১৬ সালের ২৭ এপ্রিল প্রকল্পটি ‘ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প’ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। রেলপথটি নির্মিত হলে মিয়ানমার, চীনসহ ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের করিডোরে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।

Facebook Comments Box

Please Share This Post in Your Social Media

এই জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা