নিজস্ব প্রতিনিধি ->>
সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে বিভিন্ন স্পটে সহিংস কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে তাদের পুরনো চেহারা দেখিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এদের বাড়াবাড়ির জবাব দেওয়া হবে। পাল্টা জবাব গড়ে তুলে অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকের সামনে ‘বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও অব্যাহত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ শান্তি সামবেশে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা, পুলিশের ওপর হামলা এবং একজন পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর প্রসঙ্গ তুলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জবাব দিতে হবে। কেন আজকে একজন সজ্জন মানুষ প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে খেলা হবে, পুলিশের গায়ে যারা হাত তুলেছে। একজন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। তাদেরকে ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন, গতকাল বলেছি, আমরা শান্তি সমাবেশ করব। মির্জা ফখরুল আমাদের আগেই ঘোষণা দিয়েছেন, সমাবেশ শান্তিপূর্ণ হবে। তার সেই বক্তব্য উদ্ধৃত করে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আমি বলেছিলাম, মুখে শান্তি, অন্তরে কত মূর্তি, এটা দেখা যাবে। আজকে বুঝলেন তো, বিএনপি কত নোংরা দল, খুনি দল, সন্ত্রাসী দল। পুরনো আগুনসন্ত্রাসের চেহারা তারা আজকে আবারও দেখিয়েছে।
নেতাকর্মীদের প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সামনে এই সন্ত্রাসীদের সাথে খেলার মতো খেলতে হবে। শিক্ষা দিতে হবে। এদের স্বভাব আয়নার মতো পরিষ্কার। এদেরকে আর ক্ষমা করা যায় না। এদের বাড়াবাড়ির জবাব আমরা দেবো। ইনশাল্লাহ, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা সারা বাংলায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আবারও গড়ে তুলব, আন্দোলন গড়ে তুলব, পাল্টা জবাব গড়ে তুলব। এদের অপরাধের শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষমা নেই।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অলিগলি দিয়ে পালালেন। হায় রে! এত বড় বড় কথা। পশ্চিমারা নাকি উৎসাহ দেখাচ্ছে? কাল থেকে কাউকে আর পাবে না। দুর্বলের পক্ষে কেউ থাকে না। এত দুর্বল! দুপুর পর্যন্ত মরণকামড়, এরপর দেখি, সব পালায়। এদিকে তাকায়, ওদিকে তাকায়। নেতারা পালায়, পিছে পিছে কর্মীরাও পালায়। জামায়াতকে বলছে, ওখানে করো। কিছুক্ষণ লাফালাফি করে জামায়াতও স্থান ত্যাগ করল। আমরা থাকব, ইনশাআল্লাহ। শেখ হাসিনার কর্মীরা, বঙ্গবন্ধুর কর্মীরা মাঠে আছে, ছিল, থাকবে।
বিএনপির ‘মহাযাত্রা’ এখন মহাপতন যাত্রায় রূপ নিয়েছে, মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মহাযাত্রা এখন মরণযাত্রা। সেমিফাইনাল সামনে। তারপর ফাইনাল। নির্বাচনে ফাইনাল খেলা। খেলা হবে। দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার কষ্ট করেছেন। দুপুরে খাওয়া-দাওয়াও করতে পারেননি। আমরাও আজকে দুপুরবেলা খাওয়া থেকে বঞ্চিত। ঢাকার খবর পেয়ে চট্টগ্রাম থেকে নেত্রী হেলিকপ্টারে উঠেছেন দুপুরের খাওয়া না খেয়ে। কারণ, তার টেনশন আমাদের চেয়েও বেশি। কিন্তু, তার কথাবার্তার সুর ছিল অন্যরকম। তিনি বললেন যে, দেখব, ওরা কী করে? এসব বাড়াবাড়ি, এসব নোংরামি, আজকের যে খুনোখুনি, অস্ত্রবাজি-আগুনসন্ত্রাস, বাংলার মাটিতে অবশ্যই এদের শাস্তি হবে। এদের অপরাধের বিচার হবে। আজকে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে, আমাদের কর্মীদের গাড়িতে হামলা করে। আজকে তারা প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করে। এসব অপরাধের পর এদের কোনো ছাড় নেই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির পরিচালনায় শান্তি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন—আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, এ এই এম খায়রুজ্জামান লিটন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
এছাড়া, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, উপ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম, কেন্দ্রীয় সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, আনিসুর রহমান, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, গোলাম কবির রাব্বানী চিনু, তারানা হালিম, সানজিদা খানম, মোহাম্মদ এ আরাফাত, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল, কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ্র, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম পারভীন শিলা, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজী সরোয়ার, সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু, ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের নেতাদের মধ্যে নুরুল আমিন রুহুল এমপি, ডা. দিলীপ রায়, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মিরাজ হোসেন, আক্তার হোসেন, হাবিব হাসান এমপি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।