কাপাসিয়া, গাজীপুর প্রতিনিধি ->>
মাত্র তিনশত টাকা পাওনা চাওয়ায় চা দোকানিকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় হত্যাকারী ফারুক ও তার সহযোগিরা।
তবে পুলিশ ঠিকই হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে গত মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতে গাজীপুর মহানগরের দীঘিরচালা এলাকায়। হত্যাকান্ডের শিকার নিহত কিশোর মো. আরিফ (১৯) গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার জাওয়াদি গ্রামের মৃত আবদুল মান্নানের ছেলে বলে জানা গেছে। নিহত আরিফ গাজীপুর মহানগরের দীঘিরচালা এলাকায় চা-পান দোকানী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ২ জনকে কুমিল্লার লাকসাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার বিকেলে গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জিএমপির উপণ্ডপুলিশ কমিশনার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান। তিনি আরো জানান, পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে চা-পান দোকানদার আরিফকে হত্যা করা হয়।
হত্যাকারীরা আরিফের দোকানের ক্রেতা ছিলেন। চা-পান, সিগারেট বাবদ তিন’শ টাকার বাকি নেন হত্যাকারীরা। বাকী টাকা চাওয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে মারপিট ও পরে সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে কুপিয়ে আরিফকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পরে নিহতের মা বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা দায়ের করলে হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামীদের গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু ওই এলাকার কাউন্সিলের গলির পরিত্যাক্ত জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
জিএমপির বাসন থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সিদ্দিক জানান, হত্যাকান্ডের খবর পেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষদের দিক নির্দেশনায় দ্রুত সময়ের মধ্যে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ময়মনসিংহের কুকাইল গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে ফারুক হোসেন ও একই জেলার বৌলী কুড়াইল গ্রামের আফজালের ছেলে জুবায়ের। জিএমপির উপকমিশনার আবু তোরাব মো. শামছুর রহমান বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দিঘিরচালা এলাকায় চায়ের দোকান করতেন কিশোর আরিফ। গ্রেপ্তার ফারুক হোসেন ওই দোকানে প্রায়ই চা, সিগারেট খেতেন।
এভাবে চা-পান, সিগারেট বাবদ তার কাছে ৩০০ টাকা পাওনা হয় আরিফের। গত সোমবার রাতে স্থানীয় তুষারের বাড়ির সামনে ফারুক হোসেনের সাথে ভিকটিমের দেখা হলে ভিকটিম আরিফ তার কাছে পাওনা টাকা চায়। এতে ফারুক ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগাল করতে থাকে। আরিফ প্রতিবাদ করলে ফারুক, তার সহযোগী অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনকে সাথে নিয়ে নিহত আরিফকে মারধর করার চেষ্টা করে। ভিকটিম তাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড়ে পালিয়ে সীমা ফ্যাশন গার্মেন্টসের সামনে পৌঁছলে ফারুক ও তার সহযোগীরা পিছন দিকে দৌড়ে এসে আরিফকে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে ফারুক হোসেন তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে ভিকটিম আরিফের গলার নিচে এবং দুই পায়ের হাঁটুর নিচে কোপ মেরে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়।
আশপাশের লোকজন আরিফকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরিফকে মৃত ঘোষণা করেন। গত মঙ্গলবার এ ঘটনায় নিহত আরিফের মা আকলিমা আক্তার বাদী হয়ে বাসন থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লার লাকসাম থেকে ফারুক হোসেন ও সহযোগী জুবায়েরকে গ্রেপ্তার করে। পরে ফারুক হোসেনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আউটপাড়ার পরিত্যক্ত জায়গা থেকে হত্যার কাজে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকু উদ্ধার করা হয়।